হতাশ জেলেরা ইলিশ না পেয়ে

Ads

মাছ ধরতে নেমেছেন জেলেরা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে। জালে কাঙ্খিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন তারা। যে পরিমাণে মাছ উঠছে, তাতে নৌকার জ্বালানি খরচও উঠছে না।নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার মধ্যরাত থেকে নদীতে মাছ ধরতে নেমেছে জেলেরা। নদীতে মাছ ধরতে নেমে ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন জেলেরা।

সরেজমিন সদর উপজেলার মেঘনা নদীতীরে হরিণা মাছঘাট, বহরিয়া ও রনাগোয়াল মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঘাটে ইলিশের আমদানি অনেক কম। কিছু নৌকা ঘাটে ভিড়লেও তাতে ইলিশের পরিমাণ খুবই কম। আড়তগুলোতে ইলিশের আমদানি কম থাকায় বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।

হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে আবুল কাশেম বলেন, বুধবার মধ্যরাতে জাল নিয়ে নদীতে নেমেছি। রাতভর জাল টেনে যেই পরিমাণে মাছ পেয়েছি তাতে আমাদের খরচের টাকাই উঠছে না। অনেক আশা নিয়ে ইলিশ ধরতে নেমে আমাদের হতাশ হতে হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতেও নদীতে ইলিশ না পেলে পরিবার নিয়ে চলাটাই কষ্ট করে হয়ে যাবে।

হরিনা মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল জলিল বলেন, এ মৌসুমে নদীতে ইলিশ ধরা পড়েছে কম। অভয়াশ্রম শেষে জেলেরা নদীতে নামছে ইলিশ ধরতে। কিন্তুজালে মাছ কম পাওয়ায় আড়তে ইলিশের আমদানিও হচ্ছে কম। তাই আমাদের বেশি দামে ইলিশ কিনে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি মূল্যে।

ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা আমিনুল হক ও মেহেদী হাসান বলেন, দীর্ঘদিন পর ইলিশ ধরা শুরু হওয়ায় মাছ ঘাটে এসেছি ইলিশ কিনতে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যেই পরিমানে দাম চাচ্ছে তা আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের নাগালের বাইরে। দাম বেশি থাকায় অনেকেই ইলিশ ক্রয় করতে পারছে না।

চাঁদপুর মৎস্য ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান বলেন, এখন শীতের আগমন ঘটছে। এই সময়টাতে নদীতে ইলিশের চলাচল অনেকটাই কমে যায়। তাই জেলেরা ইলিশ কিছুটা কম পাচ্ছে। তবে হতাস হওয়ার কিছু নেই। আশাকরি আগামী জানুয়ারী ফেব্রুয়ারীর দিকে জেলেরা তাদের কাঙ্খিত ইলিশের দেখা পাবে।

ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় মা ইলিশ রক্ষায় গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের উপকূলীয় ১৯টি নদ-নদীসহ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকা নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী জানান, নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে চাঁদপুরে ২৮৫টি অভিযান চালিয়ে ৭শ’ ৪লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল, ৫টন ইলিশ জব্দ করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমান আদালতে দুই শতাধিক জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও জরিমানা করা হয়।

চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৫২ হাজার জেলে। এদের মধ্যে ৫০ হাজার জেলেকে নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে সরকারিভাবে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়।

Ads
আপনি এটাও পছন্দ করতে পারেন
Loading...