কৃষক যেন ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সে ব্যবস্থা করবে সরকার – কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুস শহীদ
যতদূর দেখা যায় সোনা রঙ ভেসে যাচ্ছে মনে হয়।দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে সোনালী বর্ণের পাকা ধান ঢেউ খেলে যাচ্ছে৷ কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত ব্রি উদ্ভাবিত বিশেষ আগাম জাতের ধান চাষ করায় হাওর অঞ্চলের অসংখ্য কৃষক এবছর আগাম ধান মাড়াই করতে পারছেন৷ অধিকাংশ ক্ষেতেরই ধান এখন পরিপক্ক হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১২টায় গামছা পড়ে ও কৃষকদের প্রচলিত তালপাতার গোল ছাতা মাথায় দিয়ে কাস্তে হাতে ধান কাটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। পরে কম্বাইন্ড হারভেস্টারে চড়ে কৃষিমন্ত্রী ধান কাটার কলাকৌশল দেখেন। ধান কাটা শেষে পাকা ধানের হাতে নিয়ে ছবি তোলেন মন্ত্রী। কৃষি মন্ত্রী বর্ষা, বন্যার আগেই দ্রুত ধান ঘরে তুলতে জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের তাগিদ দেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, ধানের দাম নির্ধারণের জন্য আগামী রোববার আমাদের সভা হবে। খাদ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কৃষক যাতে ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সে দিকে লক্ষ রাখা হবে। কৃষকরা যাতে ধান চাষে উৎসাহিত হয় সে ভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, এ বছর খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে দুই কোটি বাইশ লক্ষ মেট্রিক টন।
মন্ত্রী আরও বলেন, ধানের দামে যেন মধ্যসত্ত্বভোগী কেউ যাতে সুবিধা নিতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রকৃত কৃষকরাই যেন সঠিক দামে যেন ধান বিক্রি করতে পারে সে দিকে কঠোরভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। ধান বিক্রিতে যেন কোনও সিন্ডিকেট তৈরি না হয় সে ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
কৃষি মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ৭টি জেলার হাওরে ধান কাটার জন্য ৪ হাজার তিনশত ৪১টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দেয়া হয়েছে এরমধ্যে শুধু সুনামগঞ্জ জেলায় ৮ শত ৩৪টি কমভাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধানা কাটা শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলার লক্ষনশ্রী ইউনিয়নের দেখার হাওরপাড়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি, সুনামগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্যএডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী,
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল কালামসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের হাওরের ১০ লাখ কৃষক ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। যেখান থেকে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।