রাজারহাটে কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনের উদ্বোধন করলেন ইউএনও

Ads

করোনা ভাইরাসে মহামারীর কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা শ্রমিকের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এবারে সরকারের বেঁধে দেয়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কার্যক্রম চালাতে অনেক শ্রমিক  মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছে। আবার করোনা আক্রান্তের ভয়ে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘরেই থাকছে।

এ কারণে বর্তমান সরকার শ্রমিক সংকট নিবারণে স্বল্প সময়ে ধান কাটা-মাড়াই ও বস্তাবন্দির জন্য বিদেশে থেকে কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন আমদানী করেছেন।  ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগীতায় এ মেশিন দিয়ে কৃষকরা স্বল্প ব্যয়ে ধান কাটা শুরু করেছেন।

সোমবার কমাইন্ড হারভেস্টর মেশিন দিয়ে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম দেবত্তর সরকারবাড়ি গ্রামেও ধান কাটা উদ্বোধন করা হয়। ওই গ্রামের কৃষক অম্বিকা চরণের ৫২ শতক, সিরাজুল ইসলামের ৬০ শতক, আঃ মোন্নাফ আলীর ২০ শতক ও রমজান আলীর ২৭শতক উঠতি ইরি-বোরো ধান ক্ষেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোা. যোবায়ের হোসেন কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন চালিয়ে ধান কাটার উদ্বোধন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সজিবুল করিম ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

কৃষক অম্বিকা চরণ বলেন, ‘হামার দেড় বিঘা জমির ধান কামলা(শ্রমিক) দিয়া কাটতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা দ্যায়া নাগিল হয়। তাও আবার কামলায় পাওয়া যায় না। আর এমন মেশিন বাহে মুই জন্মেও দ্যাখং নাই। মেশিন খ্যান ফসাৎ (তাড়াতাড়ি) করি খ্যাতোত (ক্ষেত) ধান কাটিল।  ফের ডাংয়েও (মাড়াই)দিলে বাহে। সবমিলি হামার খরচা হইল ২২’শ টাকা।’

এ বিষয়ে (৬ মে) বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার  জানান, প্রতিটি কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনের বাজার মূল্য ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারিভাবে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ টাকা। সম্প্রতি উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম গ্রামের আব্দুল মোত্তালিব এবং নাজিমখান ইউনিয়নের রাঘব গ্রামের মো. হায়দার আলী বাকি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে প্রদান করে ২ টি মেশিন কিনেছেন।

তিনি আরও জানান, কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন ৩ লিটার ডিজেলে ১ ঘণ্টা চলে। এটা ঘণ্টায় ৫৫-৬০ শতক জমির ধান কাটতে সক্ষম। সে হিসেবে দিনে বা ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১৩ একর বা ৪০ বিঘা জমির ধান কাটতে পারে। শুধু ধান কাটা নয়, এটি মাড়াই ও বস্তাবন্দি করতেও সক্ষম। এটি দিয়ে ধান ছাড়াও গম, ভূট্টা কাটা, মাড়াই ও ছাটা সম্ভব।

শ্রমিক দিয়ে এক একর জমির ধান কাটা-মাড়াইয়ে খরচ লাগে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর এ মেশিন দিয়ে একর প্রতি মেশিন দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই ও বস্তাবন্দি মিলে খরচ পড়বে মাত্র ৮ হাজার টাকা। যা কৃষকের ধান কাটার সময়, শ্রম ও অর্ধেকর বেশি খরচ বেঁচে যাবে।

Ads
আপনি এটাও পছন্দ করতে পারেন
Loading...