২৬ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ রাজশাহীতে
চার বছর আগে রাজশাহীতে গম চাষ কম হতো। রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ২৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে আশানুরূপভাবে কমে যায় গম চাষ। কিন্তু এখন গমের উন্নত নতুন জাত, সেচের ব্যবস্থা ও আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে প্রতিবছর রাজশাহীতে বাড়ছে গমের আবাদ।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, চলতি ২০২০-২১ মৌসুমে জেলায় ২৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় গমের চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে। গত বছর রাজশাহীতে ২৫ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে । ওই বছর ফলন ছিলো হেক্টর প্রতি ৩ দশমিক ৭৩ মেট্রিক টন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ৬ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বাঘায় ৫ হাজার ৫২৫ হেক্টর, চারঘাটে ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর, পবায় ২ হাজার ১৯৫ হেক্টর, তানোরে ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর, পুঠিয়ায় ২ হাজার ৫১৫ হেক্টর, বাগমারায় ১ হাজার ৫৬০ হেক্টর, দূর্গাপুরে ১ হাজার ১০ হেক্টর, মোহনপুরে ৮৫ হেক্টর, মতিহারে ৩০ এবং ৫০ বোয়ালিয়ায় হেক্টর জমেিত গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
বাঘা উপজেলার কলিগ্রাম এলাকার চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৯ বিঘা জমিতে গমের চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে গমের বীজ পেয়েছি। তবে গমের গমের বীজ পেলেও সারের সংকট দেখা দিয়েছে। আবার সার পেলেও লাগামহীন দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে সার। সারের এই লাগাম ছাড়া দামের পেছনে এক সিন্ডিকেট চক্রের হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
একই এলাকার চাষি আ: হালিম বলেন, গত চার বছর আগে বাড়িতে খাওয়ার জন্য এক থেকে দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করতেন। গত দুই বছর থেকে ৪-৫ বিঘা জমিতে গম চাষ করছেন। এখন গমের বাজার দর যেমন ভালো, তেমনি গম চাষে বাড়তি ঝামেলাও নেই। তিনি বলেন, অল্প খরচেই গম চাষ করা যায় । বিঘা প্রতি ১৬ মণ হারে গমের ফলন হয়। এ বছর ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ২৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি। জেলায় বারি-২৫, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৩ জাতের সরিষা বেশি চাষ হয়।
রাজশাহীতে দেশি জাতের গম বিঘা প্রতি ৮-১০ মণ হারে হয়। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল গম বিঘা প্রতি ১১-১৩ মণ পর্যন্ত হবে। গত বছর বৈরি আবহাওয়ার কারণে ১০-১১ মণ হলেও এবার উৎপাদন বাড়বে । বিশেষ করে এ গমে দুই থেকে তিনবার সেচ দিতে হয়। সার কীটনাশকেরও তেমন খরচ নেই।