দেড় মাসেই কৃষকের লোকসান ৫৬০০০ কোটি টাকা: গবেষণা

Ads

দেশজুড়ে চলমান করোনা ভাইরাস মহামারির প্রভাবে দেশের কৃষকের প্রায় ৫৬ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকারও বেশি লোকসান হয়েছে বলে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুন) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত এই ক্ষতির হিসাব তুলে ধরা হয়। গবেষণার আওতায় চালানো দুটি সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে ব্র্যাক।

দেশের ১ হাজার ৫৮১ জন কৃষক (ফসল, শাকসবজি, হাঁস-মুরগি, মাছ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারী) এই গবেষণায় অংশ নেন বলে ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

কৃষিখাতে এবং সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ওপর করোনা ভাইরাসের প্রভাব সম্পর্কে জানতে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে এ সমীক্ষা পরিচালিত হয়।

গবেষণার প্রকাশিত ফলাফলে জানানো হয়, করোনা মহামারির শুরুর দিকে ত্রাণ বিতরণকারী সংস্থাগুলোর ব্যাপক চাহিদা ও ভোক্তাদের আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পণ্য কেনার কারণে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য বিশেষ করে- মোটা চাল, মসুরের ডাল ইত্যাদির দাম ও বিক্রি বেড়ে যায়। চাল ও মসুরের ডালের দাম ৩০ থেকে ৩২ শতাংশ এবং ব্যবসায়ীদের এই পণ্যগুলোর বিক্রি ৩০০ শতাংশ বেড়ে যায়।

গবেষণায় বলা হয়, বাজারে পণ্যের চাহিদা বাড়লেও তা কৃষকের কোনও উপকারে আসেনি। কারণ কৃষক করোনা মহামারির আগেই তাদের মজুদ পণ্য বিক্রি করে দিয়েছিল। একইসময়ে কৃষকের পক্ষে ত্রাণ-বহির্ভূত ও পচনশীল পণ্যগুলোর উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং বিক্রি কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষক (মাছ চাষিদের ১০০ শতাংশ) আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে।

করোনার প্রভাবে উল্লিখিত সময়ে কৃষকদের সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- ন্যায্য দাম না পাওয়া ৬৬ শতাংশ, সীমিত সময়ের জন্য বাজার খোলা থাকা ৫২ শতাংশ, উৎপাদনের উপকরণসমূহের উচ্চমূল্য ৪৫ শতাংশ এবং শ্রমিক সংকট ২৮ শতাংশ।

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত- এই দেড় মাসে পণ্যের ক্ষতি ও কম দামের কারণে প্রত্যেক কৃষকের গড়ে প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার ৯৭৬ টাকা লোকসান হয়েছে। সেই হিসেবে দেশের কৃষির প্রতিটি উপখাতের সব কৃষকের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে মোট লোকসান হয়েছে প্রায় ৫৬ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকার সমান।

ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল, এসিআর এগ্রিবিজনেসের নির্বাহী পরিচালক এফ এইচ আনসারী, ব্র্যাকের ডেইরি অ্যান্ড ফুট অ্যান্টারপ্রাইজের পরিচালক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান প্রমুখ।

Ads
আপনি এটাও পছন্দ করতে পারেন
Loading...