চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার দুই উপজেলা পটিয়া ও চন্দনাইশের পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এই ফলনে চাষিদের মুখেও দেখা গেছে হাসির ঝিলিক। এসব পেয়ারা চট্টগ্রামসহ সারা দেশে যাচ্ছে। পেয়ারার দাম নিয়েও সন্তুষ্ট চাষিরা। পটিয়া ও চন্দনাইশে উৎপাদিত পেয়ারা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, স্বাদেও অনন্য। এই পেয়ারা একটানা পাওয়া যাবে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত। কৃষি অফিস ও প্রশাসনসহ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের পটিয়া ও চন্দনাইশে বিশাল পাহাড়ি এলাকাজুড়ে রয়েছে শত শত পেয়ারা বাগান। শুধু চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ, ছৈয়দাবাদ ও লালুটিয়া পাহাড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০০ থেকে এক হাজার পেয়ারা বাগান রয়েছে। পটিয়ায় রয়েছে ৩০০ পেয়ারা বাগান। এ ছাড়া পার্শবর্তী চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। এখানকার চাষিদের অনেকেই পেয়ারা চাষ করে ঘুচিয়েছেন বেকারত্বের অভিশাপ।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা জাহান উপমা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পটিয়া, চন্দনাইশ ও ফটিকছড়িতে পেয়ারার ভালো ফলন হয়েছে। এখানে কয়েক হাজার বাগানও রয়েছে। একই কথা বললেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কবির হোসেনও। পটিয়ার পেয়ারা বিক্রেতা রহমত আলী বলেন, পটিয়া ও চন্দনাইশের পেয়ারা চট্টগ্রাম ছাড়াও বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের পাহাড়ের এসব পেয়ারা অনেক সুস্বাদু। এবার করোনা হলেও ফলন ভালো হয়েছে। দেশে দুই জাতের পেয়ারার মধ্যে একটি কাজি পেয়ারা অন্যটি কাঞ্চননগরী পেয়ারা। কাজী পেয়ারা আকারে বড় হলেও স্বাদ একটু কম। তিনি বলেন, পেয়ারা সংরক্ষণে দক্ষিণ চট্টগ্রামে একটি হিমাগার নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
চন্দনাইশের পেয়ারার ব্যাপারি শামসুল আলম বলেন, ব্যাপারিরা শ্রাবণ মাস থেকে তিন মাসের জন্য পেয়ারা বাগানগুলো কিনে নেন। বাগানের পরিধি অনুযায়ী দাম নির্ধারিত হয়। তারপর পুরো মৌসুমে চলে পেয়ারা সংগ্রহ। সূর্য উঠতেই শ্রমিকরা পেয়ারা সংগ্রহে নেমে পড়েন। তিনি বলেন, চন্দনাইশের কাঞ্চননগরী পেয়ারার আকার ছোট হলেও স্বাদ ও পুষ্টিতে ভরপুর। চট্টগ্রামের পটিয়া ও চন্দনাইশের কাঞ্চননগর এলাকায় কাজি পেয়ারা আর কাঞ্চননগরী পেয়ারার মূল উৎপাদনস্থল বলেও জানান তিনি।