সৌদি খেজুরের বাগান করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ছোট কাচনা গ্রামের মো. সোলাইমান খান। গাছগুলো এ বছর খেজুর ধরার উপযোগী হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি বাগানের সবুজ রং মানুষের দৃষ্টি কাড়ছে। চলতি মৌসুমে বাগানের কিছু গাছে মোচা ও খেজুর ধরেছে।
সোলাইমান জানান, ২০১৯ সালের মে মাসে বন্ধুদের মাধ্যমে প্রথমে সৌদি আরব থেকে বীজ আনেন। পরে গাজীপুর, নরসিংদী থেকেও সৌদি খেজুরের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পশ্চিম পাশের ২ বিঘা জমিতে রোপণ করেন। প্রথমে নিজের মতো করে গাছের পরিচর্যা করতে থাকেন। পরবর্তীতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে গাছের যত্ন নিয়ে বাগান করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি নার্সারিও করেছেন। নার্সারিতে ৫০০-১৫০০ টাকায় খেজুর চারা বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে তার বাগানে ৪ হাজারের মত খেজুর গাছ আছে।
তিনি মনে করেন, মানুষের ইচ্ছা ও পরিশ্রমই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। সে উদ্যম নিয়েই তিনি নিরলসভাবে পরিশ্রম করছেন এ বাগানে।
ছোট কাচনা গ্রামের কাঞ্চন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গ্রামের সোলাইমান সৌদির খেজুর চাষ করছেন। কিছু গাছে খেজুরও ধরেছে। চিন্তা করেছি, সোলাইমানের কাছ থেকে চারা নিয়ে আমিও খেজুর গাছ চাষ করবো।’
নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. হুমায়ূন আকন বলেন, ‘আমরা জানি সৌদিতে এ খেজুর চাষ হয়। আর সেই খেজুর চাষ করছে আমাদের গ্রামের সোলাইমান। দূর থেকে অনেকে খেজুর গাছ ও খেজুর দেখতে আসে। সোলাইমানের দেখাদেখি গ্রামের আরও কৃষক খেজুর চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।’
গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্যাণ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সৌদির খেজুর সাধারণত মরু এলাকায় ভালো হয়। ফলে আমাদের দেশে এর কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া কষ্টসাধ্য। তবে আমাদের দেশে উঁচু শুষ্ক জমিতে বিশেষ করে বেলে-দোঁআশ মাটিতে এ জাতের চারা লাগালে মোটামুটি ফলন পাওয়া যেতে পারে। ছোট কাচনা গ্রামের সোলাইমান খানের লাগানো খেজুর বাগানের মাটি খেজুর চাষের উপযোগী।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও দীর্ঘ পরিচর্যার ফলে বাগানের চারাগুলো এখন গাছে পরিণত হয়েছে। বাগানটিতে খেজুর ধরা শুরু করেছে। পাশাপাশি খেজুর চারা বিক্রি করছেন তিনি। এলাকার অনেকেই সৌদি খেজুর চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’