দেশের মিঠা পানির সবচেয়ে বড় জলাভূমি হচ্ছে চলনবিল । যমুনা নদীর বাঘাবাড়ির হুরাসাগর হয়ে বড়াল ও গুমানি নদীপথে বন্যার শুরুতে বিলে দেশিয় প্রজাতির মা মাছ প্রবেশ করে প্রজনন শুরু করে। এ বছর দুই মাসের মতো বন্যার পানি থাকায় ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠর নজরদারির কারণে মৎস্য শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যায় মা মাছ ও পোনা। ফলে বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে দেখা মিলছে প্রচুর দেশিয় মাছের।
এদিকে স্থানীয় বাজারগুলোতে চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ বেশি থাকায় সব ধরনের মাছ অর্ধেকেরও কম দামে বেচাকেনা হচ্ছে।
সরেজমিনে বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খড়াজাল, মইয়াজাল, ধর্মজাল, ঝাঁকি জাল, বাদাই জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন জেলে ও সৌখিন মাছ শিকারিরা। তাদের জালে ধরা পড়ছে পুঁটি, টেংরা, পাঁতাসি, রায়েক, চেলা, মোয়া, চাটা খইলসা, বাড়ি খইলসা, বাইলা, গুচি, টাকি, কই, জিয়াল, মাগুড়, বোয়াল, রুই, কাতলা, মৃগেলসহ হরেক মাছ।
সোমবার সকালে তাড়াশ পৌর শহরের মাছ বাজারে প্রতিকেজি পুঁটি ও চাটা খইলসা ৪০ টাকা, বোয়াল, কই, জিয়াল, ট্যাংরা, গুচি ২০০/২৫০ টাকা, আর রুই, কাতলা, মৃগেলের দাম ওজন ভেদে ১০০/১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মৎস্যজীবী করিম প্রামানিক, মানিক প্রামানিক, লিটন আহমেদ, আব্দুল মজিদ ও সোহেল রানা বলেন, চলনবিলের মূল অংশে একখনও বেশ পানি রয়ে গেছে। তবে উঁচু অঞ্চলে কোথাও কোমড় পানি আবার কোথাও হাটু পর্যন্ত পানি। কম পানিতে প্রচুর পরিমাণে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে।
তারা আরো বলেন, খড়া জালে প্রতি ৩/৫ মিনিট পর ২/৩ কেজি ছোট-বড় মাছ উঠে আসছে। আর কারেন্ট জালে ছোট মাছ পরিমাণে বেশি আটকা পড়ায় জাল বাড়িতে এনে স্ত্রী সন্তান নিয়ে মাছ ছাড়াতে হচ্ছে।
তাড়াশ পৌর শহরের মাছ বাজারের মাছ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম, আলামিন হোসেন, শফিকুল ইসলাম জানান, জেলেরা ভোর থেকে সন্ধা অবদি বাজারে মাছ নিয়ে আসেন। তাদের ধারনা, মাছের দাম আরো কমে যাবে।
তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুসগুল আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন যথাযথ ভূমিকা রাখায় ও মৎস্যজীবীরা প্রচলিত মৎস্য আইন মেনে চলার কারণে চলনবিলে প্রচুর পাছ পাওয়া যাচ্ছে।