নওগাঁর ধামইরহাটে বাণিজ্যিক ভাবে পান চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন শতাধিক পরিবার। দীর্ঘ করোনার ভয়াল থাবা এবং টানা বৃষ্টিতে মুখ থুবড়ে পড়া প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা ধকল কাটিয়ে উঠেছে। শেষ সময়ে পানের দামে হাসি ফুটেছে চাষিদের।
জানা গেছে, উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত জোতরাম, মানপুর, চন্দ্রাকোলা, গনেশপুর ও ধনজয়পুর এলাকার প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। ওই এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির কৃষকরা বাড়ির পাশে অথবা তিন ফসলি জমিতে কম বেশি বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে তুলেছেন পান বরজ।
সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত পান বরজের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। টানা বৃষ্টিতে এবার অনেকের বরজের পান নষ্ট হয়েছে। তবে বাজারে পানের দাম বৃদ্ধি থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবে এমনটা মনে করছেন অনেকে।কৃষকদের বরজের পান উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববতি জেলার জয়পুরহাট, হিলি বাজার ও বর্ডার পেরিয়ে কলকাতার বাজারে যায়। স্বাদে ও মানে ভালো হওয়ায় পান পর্যায়ক্রমে বাজারজাত বাড়তে শুরু হয়েছে।
জোতরাম এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে কৃষক মো. আতলাব হোসেন জানান, প্রায় ৪০ বছর থেকে সে পান চাষ করেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সে তার ২টি বরজে ২৪ শতাংশ জমিতে পান চাষ করেছে। প্রতি বছরে সে তার বরজ থেকে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকা করে আয় করে থাকে।
কিন্তু এবারে টানা বৃষ্টিতে তার পান বরজের ক্ষতি হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটিয়ে সে বর্তমানে তার বরজ থেকে পান খোলা বাজারে ও বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রি করতে শুরু করেছে। সে প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার পান বিক্রি করেন খোলা বাজারে। তিনি বলেন, পান এখনো বড় সাইজে আসেনি আসলে আরো ভালো দামে বিক্রি করবেন বলে আশা রাখেন।
এ বিষয়ে ইসবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েশ বাদল জানান, প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা পান চাষে সাবলম্বি হতে শুরু করেছে। তাদের দেখে অনেকে নতুন করে পান চাষে আগ্রহি হচ্ছে এটা আসলে প্রশংসিত একটি বিষয়। সেই সাথে আরো এই পান চাষ ছড়িয়ে পড়তে সর্বদা কৃষকের মাঝে পরামর্শ প্রদান করে থাকি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, পানের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। চাষিদের সর্বাত্তক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সেই থেকে একটি পান বরজ তৈরির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি কৃষককে কীটনাশ থেকে শুরু রোগ বালাই দমনে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।