১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস -এর মধ্যে তাপমাত্রা ধানের ফলনের জন্য উত্তম। ধানের থোড় অবস্থায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ধানের ফুল অবস্থায় ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এর নিচে তাপমাত্রা চলে গেলে। থোড়ের ভিতর ভ্রূণের গর্ভপাত হতে পারে। ফলে ধানের থোড় থেকে ফুল বের হওয়ার পরপরই সাদা মরা অপরিপক্ব মঞ্জুরি দেখা যায়।
ঠিক একই ভাবে ফুল ফোটার সময় যদি তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এর নিচে নেমে যায় তা হলেও ধানের ফুল বা মঞ্জুরি সাদা হয়ে মরে যেতে পারে। ধানের থোড় বা ফুল অবস্থায় তাপমাত্রা যদি ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এর বেশি চলে যায় তা হলেও ধান চিটা হয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ধানের থোড় ও ফুল অবস্থায় আঘাতজনিত ইনজুরির কারণেও ধান সাদা চিটা হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ কোল্ড ইনজুরি বা হিট ইনজুরির কারণেও ধানের থোড়ের মধ্যে ভ্রূণের গর্ভপাত হয়ে ছড়ার আংশিক সাদা হয়ে মরা বের হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ধান খেতে কোনো ওষুধ দিয়ে লাভ নেই ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝড়ঝঞ্ঝা- শিলাবৃষ্টি, অসময়ে অতি শীত- অতি গরম ধানচাষে নতুন করে কৃষকদের নতুন-নতুন সমস্যা, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
কৃষকভাইদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ:
ধানের জন্য অসহনীয় তাপমাত্রা হলো ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি। ফুল ফোটার সময় যদি এই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ধানের জমিতে এক দুই ঘণ্টা বিরাজ করলে মাত্রাতিরিক্ত চিটা হয়ে যাবে। মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দিনের বেলায় তাপমাত্রা প্রায়ই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেড়ে যেতে পারে।
কৃষকদের করণীয়:
১. উন্নত ও প্রতিরোধী জাত লাগানো
২. রোগমুক্ত বীজ বপন।
৩. সুষম সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা।
৪. ধানের থোড় ও ফুল অবস্থায় খেতে পানি নিশ্চিত করা বা রাখা।
৫. জমিতে সর্বদা পানি রাখুন।
৬. গর্ভাবস্থা থেকে দুধ অবস্থা পর্যন্ত ২২ থেকে ২৫ দিন জমিতে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখুন। ৩/এমওপি সার ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতাংশ হিসেবে জমিতে স্প্রে করুন অথবা বিঘাপ্রতি ৫ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করুন।
৭. ধানের ফুল অবস্থায় স্প্রে করার প্রয়োজন হলে অবশ্যই পড়ন্ত বিকেলে বালাইনাশক স্প্রে করুন।
৮. সাধারণত সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ধানের পরাগায়ন ঘটে। এই অবস্থায় স্প্রে করলে পরাগায়নের সমস্যা হয় এবং ধানের চিটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই জন্য বিকেল বেলায় স্প্রে করতে হবে।